এই বিজয়কে দুর্নীতি ও ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজে লাগাতে হবে।”

ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন পরবর্তী দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে খেলাফত মজলিস সিলেট মহানগর ও জেলা শাখর পক্ষ থেকে
০৭ আগস্ট ২০২৪ বুধবার বিকেল ৪টায় এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর ইউনাইটেড সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং এ লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন খেলাফত মজলিস সিলেট জেলা সভাপতি মাওলানা নেহাল আহমদ। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন সিলেট মহানগর সভাপতি হাফিজ মাওলানা তাজুল ইসলাম হাসান।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের শুকরিয়া আদায় করছি, যিনি স্বৈরাচারের রাহুমুক্ত একটি দেশ আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন। দেশের ছাত্র জনতার রক্তদান আর আত্মত্যাগের বিনিময়ে এক অভূতপূর্ব গণঅভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারি খুনী হাসিনার কবল থেকে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে। এ অভ্যুত্থান দেশের হাজারো শহীদ, আর লাখো ছাত্র-জনতার ত্যাগের ফসল। এ বিজয়ের মুহূর্তে ছাত্রজনতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং এই আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারী সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আমরা অতীব দু:খের সাথে লক্ষ্য করছি, কিছু কিছু জায়গায় লুটপাট ও অগ্নিসংযাগের ঘটনা সংগঠিত হচ্ছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ী, উপাসনালয় ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। যা অত্যন্ত আপত্তিকর বিষয়। বিশেষ কোন মহল এ বিজয়কে কলংকিত করার জন্য এহেন ঘটনা ঘটাতে পারে। ছাত্র জনতার এ গণ-অভ্যুত্থান ও বিজয় সবার। সবাই মিলে এক সুন্দর ও অর্থবহ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশ প্রেমিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সংগঠন, ছাত্র শিক্ষক, সাংবাদিক, পেশাজীবী ও সচেতন দেশবাসীকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেসব পদক্ষেপ নিতে হবে:
১. অবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে।
২. শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মানতে হবে।
৩. গ্রেফতারকৃত সকল ছাত্র—শিক্ষক রাজনীতিবিদ, আলেম-উলামা ও নিরপরাধ মানুষকে অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তি দিতে হবে।
৪. এ আন্দোলনে নিহত সকল শহীদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান দ্রুত কার্যকর করতে হবে।
৫. আহতদের জরুরি ভিত্তিতে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা সহ সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
৭. খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা এবং সব খুনের বিচার করতে হবে।
৮. অবিলম্বে গুম হওয়া ব্যক্তিদেরকে উদ্ধার করতে হবে।
৯. দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন সহ সবকিছু ঢেলে সাজাতে হবে।
১০. বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে প্রত্যাহার করতে হবে।
১১. ছাত্র-জনতার এ অভূতপূর্ব বিজয়কে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজে লাগাতে হবে।
১২. বিগত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী রাজনৈতিক দলসমূহকে বয়কট করতে হবে।
১৩. সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ী ঘর, উপাসনালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ পেশাগত কোন কাজে হামলার ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সবাইকে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে।
১৪. আরব আমীরাত, সৌদি আবরসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আটক বাংলাদেশী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের দ্রুত মুক্তির উদ্যোগ নিতে হবে। আটক প্রত্যেক রেমিট্যান্স যোদ্ধার পরিবারকে নিয়মিত মাসিক আর্থিক সহযোগিতা করতে হবে।
১৫. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি কল্পে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও অবিলম্বে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাত থেকে অস্ত্র উদ্ধার অভিযান শুরু করতে হবে।

প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিস সিলেট জোনের সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, সিলেট মহানগর সহ-সভাপতি মাওলানা শাহ আশিকুর রহমান, আব্দুল হান্নান তাপাদার, কে.এম আবদুল্লাহ আল মামুন, সিলেট জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা মুখলিসুর রহমান, জেলা সাধারন সম্পাদক মাওলানা দিলওয়ার হোসাইন, মহানগর সাধারণ সম্পাদক হাফিজ মাওঃ জাবেদুল ইসলাম চৌধুরী, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রচার ও ক্যাম্পাস সম্পাদক জাকারিয়া হোসাইন জাকির, খেলাফত মজলিস সিলেট মহানগর সহ সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জুনায়েদ আহমদ, মাসুদ আহমদ, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুশ শহীদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা খায়রুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র মজলিস সিলেট পূর্ব জেলা সভাপতি মুজিবুর রহমান খান, পশ্চিম জেলা সভাপতি ইমদাদুল হক ইমরান, শাবিপ্রবি সভাপতি শেখ হোসাইন আহমদ, সিলেট মহানগর সেক্রেটারি মিজানুর রহমান প্রমুখ।।