সিলেট ১১:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সাংবাদিক মঈন উদ্দিন ও ডালিমকে দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাবের সংবর্ধনা প্রদান Logo দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাবের ইফতার ও দোয়া মাহফিল Logo রেঙ্গা হাজিগঞ্জ ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট ইউ কে’র নগদ ঈদ উপহার বিতরনঃ- Logo সিলেটে নওমুসলিম পরিবারের সদস্যরা ঈদ উপহার পেলেন তারেক রহমানের Logo গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশন অফ বাফেলো নিউইয়র্কের ইফতার ও উপদেষ্টা মন্ডলীর পরিচিতি অনুষ্টান । Logo ২ জন শহীদ পরিবারের মধ্যে ঈদ উপহার সামগ্রী তুলে দেন সিলেটের জেলা প্রশাসক Logo মোগলাবাজার ইউনিয়ন আল ইসলাহ-তালামীযের সেমিনার ও ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo সিলামে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে ভিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা Logo দক্ষিণ সুরমায় খেলাফত মজলিসের ইফতার মাহফিল Logo যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ ছাতকে আওয়ামী লীগের চার নেতাকর্মী গ্রেফতার

পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে বাংলাদেশের রুপু

  • নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৮:৪২ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১০ জুলাই ২০২৩
  • ১৫৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ জাতীয় অনূর্ধ্ব ১৫ ও ১৭ দলের সাবেক ক্রিকেটার আশরাফুল মামুন রুপু ইউরোপীয় দেশ পর্তুগালের জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়েছেন। রুপু বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলার জন্য যখন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছিলেন, তখন ইনজুরি ও পারফরম্যান্সের ঘাটতির কারণে তাকে ক্রিকেট থেকে দূরে সরে যেতে হয়েছিল।


 ্এরপর ২০১৮ সালের শেষ দিকে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে উচ্চশিক্ষার জন্য পর্তুগালে চলে যান তিনি। সেখানে গিয়ে আবারো ক্রিকেট মাঠে নেমে পড়েন রুপু। হাঙ্গেরিতে আগামী ১৫ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া ত্রি-দেশীয় টুর্নামেন্টের জন্য পর্তুগিজ জাতীয় ক্রিকেট দলে ডাক পেয়েছেন অলরাউন্ডার রুপু। 

আশরাফুল আলম রুপু হবিগঞ্জের নিউ মুসলিম কোয়ার্টার এলাকার অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার মো. আব্দুল মোনায়েম ও মরহুমা আশরুফা সুলতানার ছেলে। গ্রামের বাড়ি বানিয়াচং উপজেলার মিয়াখানী মহল্লায়। পর্তুগিজ দলে সুযোগ পাওয়ার জানার পর হবিগঞ্জে ক্রীড়াঙ্গণসহ সর্বত্র আনন্দ বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অভিনন্দনের বন্যায় ভাসছেন আশরাফুল রুপু।

পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়ে এই প্রতিবেদককে আশরাফুল রুপু তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমার খুবই ভাল লাগছে। আমার পরিবারের লোকজনও খুব খুশি। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট অনূর্ধ্ব ১৫ ও ১৭ দলে খেলেছি। কিন্তু এ্যাংকেল ইনজুরি ও বাজে পারফরমেন্সের জন্য অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ডাক পাইনি। এরপর নিজের ক্যারিয়ারের কথা ভেবে ২০১৮ সালের শেষের দিকে পড়াশোনার জন্য পর্তুগালে চলে আসি। সেখানে বন্ধুদের মাধ্যমে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবে যুক্ত হই। এরপর দুই বছর ক্রিকেটে মনোনিবেশ করি। এরই ফলস্বরূপ পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট টিমে সুযোগ পাই। 

আশরাফুল রুপু তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়ে বলেন, হবিগঞ্জ জেলা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ইব্রাহিম খলিল সোহেল ভাইয়ের মাধ্যমে শাপলা সংসদে যুক্ত হই। পরে হবিগঞ্জ জেলা ও সিলেট বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৫ দলে সাফল্য পাই। এ কারণে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৫ দল ও পরে অনূর্ধ্ব-১৭ দলে খেলার সুযোগ হয়। কিন্তু এরপর বাংলাদেশের ক্রিকেট আর এগোতে পারিনি। যে কারণে আমি ও আমার পরিবারের লোকজন হতাশ ছিলাম। কিন্তু এখন পর্তুগাল দলে সুযোগ পাওয়ায় আবারো আমার সামনে নিজেকে মেলে ধরার একটা সুযোগ পেয়েছি। 

হবিগঞ্জ জেলা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক পেসার ইব্রাহিম খলিল সোহেল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, রুপু বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন অন্যতম অলরাউন্ডার হিসেবে স্থান করে নেবে, এই প্রত্যাশাতেই ছিলাম। কিন্তু নানা কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এখন পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ করে নিয়ে নিজের অদম্য ইচ্ছা ও পরিশ্রমের উদাহরণ হয়েছে আমাদের রুপু। সে এখন ইউরোপের ক্রিকেটে সৌরভ ছড়িয়ে বাংলাদেশের সম্মান বৃদ্ধি করবে। 

ইব্রাহিম খলিল সোহেল বলেন, একদিন আমি বাড়িরে উঠোনে আশরাফুল মামুন রুপুকে বল করতে দেখে বলেছিলাম- ‘ভাই তোর বল তো অনেক ভাল। কাল মাঠে আসিস। এরপর শাপলা সংসদের হয়ে কিশোর বয়সে দারুণ পারফর্ম করেছিল। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। জেলা দলের পাশাপাশি সিলেট বিভাগীয় বয়সভিত্তিক দলে সুযোগ পায় সে। বিভাগীয় দলের হয়ে আটটি একদিনের ম্যাচে ৩৩ উইকেট পায় সে। এরপর জাতীয় বয়সভিত্তিক দলে সুযোগ পায়। কিন্তু একপর্যায়ে ইনজুরি ও ফর্মহীনতা তাকে ক্রিকেট থেকে ছিটকে দেয়। তার অদম্য মনোবল তাকে আবারো ক্রিকেটে ফিরিয়ে এনেছে।

হবিগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি এডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান বলেন, আমি যখন অনূর্ধ্ব-১৪ জেলা দলের দায়িত্বে ছিলাম তখন রুপু আমার নজরে আসে। অনুশীলনে ভাল করায় তাকে আমিসহ অধিনায়ক বানাই। রুপুর যোগ্যতা ছিল বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার হওয়ার। তার নিজের কিছু অবহেলার পাশাপাশি তখনকার বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের নির্বাচকদের তৎপরতার অভাবে সে একটি পর্যায়ে আটকে যায়। আমি আশাবাদী রুপু পর্তুগালের পক্ষে ভালো করবে।

আশরাফুল মামুন রুপুর এ সফলতায় তার পরিবারের লোকজন উচ্ছ্বসিত। তারা দেশবাসীর কাছে তার জন্য দোয়া চেয়েছেন। আইসিসির ওয়েবসাইটসূত্রে জানা যায়, পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে ১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) সহযোগী সদস্য হয়। টি-২০ ফরম্যাটে আইসিসির র‌্যাংকিংয়ে ৪৪তম অবস্থানে রয়েছে দেশটি। এখন পর্যন্ত ২২টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলেছে দেশটি। যার মধ্যে ১৮টি জয় ও ৪টি পরাজয় রয়েছে। ২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর স্পেনের সাথে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলে পর্তুগাল। 

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক মঈন উদ্দিন ও ডালিমকে দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাবের সংবর্ধনা প্রদান

পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে বাংলাদেশের রুপু

আপডেট সময় : ০৫:৩৮:৪২ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১০ জুলাই ২০২৩

বাংলাদেশ জাতীয় অনূর্ধ্ব ১৫ ও ১৭ দলের সাবেক ক্রিকেটার আশরাফুল মামুন রুপু ইউরোপীয় দেশ পর্তুগালের জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়েছেন। রুপু বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলার জন্য যখন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছিলেন, তখন ইনজুরি ও পারফরম্যান্সের ঘাটতির কারণে তাকে ক্রিকেট থেকে দূরে সরে যেতে হয়েছিল।


 ্এরপর ২০১৮ সালের শেষ দিকে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে উচ্চশিক্ষার জন্য পর্তুগালে চলে যান তিনি। সেখানে গিয়ে আবারো ক্রিকেট মাঠে নেমে পড়েন রুপু। হাঙ্গেরিতে আগামী ১৫ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া ত্রি-দেশীয় টুর্নামেন্টের জন্য পর্তুগিজ জাতীয় ক্রিকেট দলে ডাক পেয়েছেন অলরাউন্ডার রুপু। 

আশরাফুল আলম রুপু হবিগঞ্জের নিউ মুসলিম কোয়ার্টার এলাকার অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার মো. আব্দুল মোনায়েম ও মরহুমা আশরুফা সুলতানার ছেলে। গ্রামের বাড়ি বানিয়াচং উপজেলার মিয়াখানী মহল্লায়। পর্তুগিজ দলে সুযোগ পাওয়ার জানার পর হবিগঞ্জে ক্রীড়াঙ্গণসহ সর্বত্র আনন্দ বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অভিনন্দনের বন্যায় ভাসছেন আশরাফুল রুপু।

পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়ে এই প্রতিবেদককে আশরাফুল রুপু তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমার খুবই ভাল লাগছে। আমার পরিবারের লোকজনও খুব খুশি। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট অনূর্ধ্ব ১৫ ও ১৭ দলে খেলেছি। কিন্তু এ্যাংকেল ইনজুরি ও বাজে পারফরমেন্সের জন্য অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ডাক পাইনি। এরপর নিজের ক্যারিয়ারের কথা ভেবে ২০১৮ সালের শেষের দিকে পড়াশোনার জন্য পর্তুগালে চলে আসি। সেখানে বন্ধুদের মাধ্যমে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ক্লাবে যুক্ত হই। এরপর দুই বছর ক্রিকেটে মনোনিবেশ করি। এরই ফলস্বরূপ পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট টিমে সুযোগ পাই। 

আশরাফুল রুপু তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়ে বলেন, হবিগঞ্জ জেলা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ইব্রাহিম খলিল সোহেল ভাইয়ের মাধ্যমে শাপলা সংসদে যুক্ত হই। পরে হবিগঞ্জ জেলা ও সিলেট বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৫ দলে সাফল্য পাই। এ কারণে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৫ দল ও পরে অনূর্ধ্ব-১৭ দলে খেলার সুযোগ হয়। কিন্তু এরপর বাংলাদেশের ক্রিকেট আর এগোতে পারিনি। যে কারণে আমি ও আমার পরিবারের লোকজন হতাশ ছিলাম। কিন্তু এখন পর্তুগাল দলে সুযোগ পাওয়ায় আবারো আমার সামনে নিজেকে মেলে ধরার একটা সুযোগ পেয়েছি। 

হবিগঞ্জ জেলা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক পেসার ইব্রাহিম খলিল সোহেল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, রুপু বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন অন্যতম অলরাউন্ডার হিসেবে স্থান করে নেবে, এই প্রত্যাশাতেই ছিলাম। কিন্তু নানা কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এখন পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ করে নিয়ে নিজের অদম্য ইচ্ছা ও পরিশ্রমের উদাহরণ হয়েছে আমাদের রুপু। সে এখন ইউরোপের ক্রিকেটে সৌরভ ছড়িয়ে বাংলাদেশের সম্মান বৃদ্ধি করবে। 

ইব্রাহিম খলিল সোহেল বলেন, একদিন আমি বাড়িরে উঠোনে আশরাফুল মামুন রুপুকে বল করতে দেখে বলেছিলাম- ‘ভাই তোর বল তো অনেক ভাল। কাল মাঠে আসিস। এরপর শাপলা সংসদের হয়ে কিশোর বয়সে দারুণ পারফর্ম করেছিল। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। জেলা দলের পাশাপাশি সিলেট বিভাগীয় বয়সভিত্তিক দলে সুযোগ পায় সে। বিভাগীয় দলের হয়ে আটটি একদিনের ম্যাচে ৩৩ উইকেট পায় সে। এরপর জাতীয় বয়সভিত্তিক দলে সুযোগ পায়। কিন্তু একপর্যায়ে ইনজুরি ও ফর্মহীনতা তাকে ক্রিকেট থেকে ছিটকে দেয়। তার অদম্য মনোবল তাকে আবারো ক্রিকেটে ফিরিয়ে এনেছে।

হবিগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি এডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান বলেন, আমি যখন অনূর্ধ্ব-১৪ জেলা দলের দায়িত্বে ছিলাম তখন রুপু আমার নজরে আসে। অনুশীলনে ভাল করায় তাকে আমিসহ অধিনায়ক বানাই। রুপুর যোগ্যতা ছিল বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার হওয়ার। তার নিজের কিছু অবহেলার পাশাপাশি তখনকার বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের নির্বাচকদের তৎপরতার অভাবে সে একটি পর্যায়ে আটকে যায়। আমি আশাবাদী রুপু পর্তুগালের পক্ষে ভালো করবে।

আশরাফুল মামুন রুপুর এ সফলতায় তার পরিবারের লোকজন উচ্ছ্বসিত। তারা দেশবাসীর কাছে তার জন্য দোয়া চেয়েছেন। আইসিসির ওয়েবসাইটসূত্রে জানা যায়, পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে ১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) সহযোগী সদস্য হয়। টি-২০ ফরম্যাটে আইসিসির র‌্যাংকিংয়ে ৪৪তম অবস্থানে রয়েছে দেশটি। এখন পর্যন্ত ২২টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলেছে দেশটি। যার মধ্যে ১৮টি জয় ও ৪টি পরাজয় রয়েছে। ২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর স্পেনের সাথে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলে পর্তুগাল।